দেশের বাজারে ফের বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। কোনো ঘোষণা ছাড়াই সয়াবিন তেল লিটারে ৪ টাকা দাম বাড়িয়েছে আমদানিকারক ও বাজারজাতকারীরা। যদিও গত ৭ ডিসেম্বর এই দাম বাড়ানো হয়েছিল কিন্তু সরবরাহ না থাকায় বাজারে তা কার্যকর হয়নি। এছাড়াও বছরের শেষ শুক্রবারে এসে চড়া দাম অব্যাহত রয়েছে সব ধরনের সবজিসহ পেঁয়াজ ও আলুর বাজারে।
শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৭৩ টাকায়। একইভাবে দাম বেড়ে প্রতি দুই লিটার তেলের বোতল ৩৩৮ থেকে ৩৪৬ টাকা, ৩ লিটার ৫২০ ও ৫ লিটার ৮৪৫ টাকা দরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, হুট করেই বৃহস্পতিবার থেকে কোম্পানিগুলো নতুন দামে তেল সরবরাহ শুরু করেছে। ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিক্রেতা পর্যায়েও মুনাফা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে ৫ লিটার তেল বিক্রিতে ২০ টাকা মুনাফা করলেও এখন তা অর্ধেক করা হয়েছে। সে হিসাবে লিটারে তেলের দাম বেড়েছে ৬ টাকা।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু নতুন রেটে তেলের সরবরাহ না থাকায় বেশির ভাগ দোকানে আগের দামেই তেল বিক্রি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে কোম্পানিগুলো নতুন রেটে বোতলজাত তেল সরবরাহ শুরু করে।
এদিকে নতুন মৌসুমি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লেও দাম বাড়তিই রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বাজারে পুরাতন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা দরে। আর মানভেদে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকার উপরে। অন্যদিকে নতুন মৌসুমি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা দরে। সে হিসেবে এ সপ্তাহে দেশি মৌসুমি পেঁয়াজে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জানা গেছে, আপাতত সংকট থাকলেও নতুন মৌসুমের দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হয়েছে। ফলে ভারতও যেকোনো সময় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে পারে। এই অবস্থায় বর্তমানে ১২০ টাকায় ডলারের বিনিময় মূল্য ও ১২০-১৫০ শতাংশ মার্জিন দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করে মুনাফা করতে পারবে কি না, তা নিয়ে আমদানিকারকরা শঙ্কিত। তাই ঝুঁকি নিয়ে কোনো আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানি করছে না। এতেই বাজারে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন পাইকাররা।
এদিকে গত সপ্তাহের দামেই অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। তবে গত দু’সপ্তাহে ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে প্রায় ২০ টাকা বেড়ে এদিন বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। এছাড়াও কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২শ’ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৩০ টাকা দরে। অন্যদিকে গত সপ্তাহের দাম অব্যাহত রয়েছে চিনির বাজারে। তবে এখনও বাজারে খোলা চিনির সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, নতুন রেটে প্রতি কেজি প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা দরে।
এছাড়াও অপরিবর্তিত দামেই বিক্রি হয়েছে আদা ও রসুনসহ অন্যন্য আমদানি পণ্য। এদিন প্রতি কেজি আদা ২৪০ টাকা ও রসুন বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা কেজি দরে। বাড়তি দাম রয়েছে মসুর ডালেও, প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকার উপরে।
এদিকে বছরের শেষ সপ্তাহে এসে চড়া সব ধরনের সবজির দাম। পেঁপে আর শালগম ছাড়া ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। এ ছাড়াও বছরের এ সময়ে নতুন আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪ গুণ বেশি দামে। শুক্রবার রাজধানীর বাজারে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকার উপরে। একই অবস্থা সবজির বাজারে। ডিসেম্বরে সবজির ভরা মৌসুম হলেও গত বারের তুলনায় ৩ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি।
এদিন প্রতি কেজি সিম ও টমেটো বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপির ৪০ টাকা দরে। যা গত বছরের একই সময়ে ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা দরে। যা গত বছর এই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা দরে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকার উপরে।
তবে গত সপ্তাহের দামে অপরিবতির্ত রয়েছে মাছের বাজার। এদিন মাছবাজারে মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০, বড় কাতল ৪শ’, বড় পাঙ্গাশ ২শ’, চাষের কই (ছোট) ৩২০, তেলাপিয়া আড়াইশ ও শিং মাছ ৬শ, শোল মাছ ৮শ’, পাবদা ৫শ’ থেকে ৬শ’, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬শ’ থেকে ৭ শ’, মলা মাছ ৫শ’, বাইলা ১ হাজার টাকা, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা, মাঝারি আকারে বোয়াল ৫শ’ থেকে ৬শ’, গুড়ামাছ ৩শ’ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫শ’, গলদা ৭শ’ এবং বাগদা ৮শ’ থেকে ৯শ’ ও রূপচাঁদা ৯শ’ টাকা দরে।
Ki r bolbo Jinisher dam etto barche 😓
ReplyDelete