নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, নাম হবে ‘হামুন’
অক্টোবর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি নিম্নচাপ হয়ে পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
রোববার (২২ অক্টোবর) আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যেটি ইতোমধ্যে নিম্নচাপেও পরিণত হয়েছে। এজন্য দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘আবহাওয়া’য় কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সংক্রান্ত ৫ নম্বর আপডেটে জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তাহলে এর নাম হবে ‘হামুন’।
তবে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ লঘুচাপের পর সাগরে আর কোনো লঘুচাপ সৃষ্ট হবে না। এজন্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে— আশঙ্কা তাদের। আবহাওয়া অফিস এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে এখনও কিছুই বলেনি।
এটি আগামী বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরের মধ্যে সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের মাঝামাঝি এলাকার উপকূলের ওপর দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড়-প্রবণ মাস।
সেই হিসেবে আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসেও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তিন মাসে বঙ্গোপসাগরে তিন থেকে ছয়টি লঘুচাপের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এর মধ্যে এক থেকে দুটি লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
তবে, চলতি মাসে (অক্টোবর) যদি সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট হয়, তাহলে বাকি একটি ঘূর্ণিঝড় নভেম্বর বা ডিসেম্বরে সৃষ্ট হতে পারে।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত। ভারতের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বঙ্গোপসাগরে এসে লঘুচাপে রূপ নিতে পারে। এরপর এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ২৪ অক্টোবর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার পর ঘূর্ণাবর্তটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে।
তবে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ লঘুচাপের পর সাগরে আর কোনো লঘুচাপ সৃষ্ট হবে না। এজন্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে— আশঙ্কা তাদের। আবহাওয়া অফিস এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে এখনও কিছুই বলেনি।
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যা বলা হয়েছে
• চলতি মাসের মধ্যভাগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে বিদায় নিতে পারে।
• অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে তিন থেকে ছয় দিন মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় এবং সারাদেশে চার থেকে আট দিন হালকা বজ্রঝড় হতে পারে।
• ওই তিন মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে যেতে পারে। এ সময়ে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি/ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
• ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
Tags:
আন্তর্জাতিক